ন্যায় দর্শন গৌতম সূত্র – চতুর্থ খন্ড – বাৎস্যায়ন – Nyaya Darsan – Fanibhushan
ন্যায় দর্শন গৌতম সূত্র – চতুর্থ খন্ড – বাৎস্যায়ন – একটি অমূল্য উপহার!
প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের এই খুঁতখুঁতে ন্যায় দর্শন প্রেমীদের জন্য একটি অমূল্য উপহার। Phanibhushan Tarkabagish এর ব্যাখ্যায় গৌতম সূত্র এবং বাৎস্যায়নের ভাব্যতা কোনও প্রেমী অনুধাবন করতে চাইলে এই খণ্ড পাঠ অবশ্যই করতে হবে। শুধু তাই না, ছাত্রদের জন্য এটি একটি মূল্যবান সহায়ক পাঠ্য পুস্তক হিসেবে নির্দিষ্টভাবে বলা যায়।
ন্যায় দর্শন গৌতম সূত্র – চতুর্থ খন্ড – বাৎস্যায়ন: দর্শনশাস্ত্রের এক অপরিহার্য অংশ
ন্যায় দর্শন, ভারতীয় দর্শনশাস্ত্রের ছয়টি অর্থবোধক দর্শনের মধ্যে একটি। গৌতম সূত্র ন্যায় দর্শনের প্রাচীনতম ও সর্বোত্তম গ্রন্থ, যেখানে ন্যায়ের মৌলিক নীতি ও বিধান সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। বাৎস্যায়নের ভাষ্য গৌতম সূত্রের একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ ভাষ্য যা ন্যায় দর্শনের গভীরতা ও বিস্তৃতি তুলে ধরে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা ন্যায় দর্শন, গৌতম সূত্র এবং বাৎস্যায়ন ভাষ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ন্যায় দর্শনের উদ্দেশ্য:
ন্যায় দর্শনের মূল উদ্দেশ্য হলো সঠিক জ্ঞান অর্জন করা। এই দর্শনের মাধ্যমে মানুষ বাস্তব জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয় এবং সঠিক জ্ঞানের সাহায্যে জ্ঞানের মূল্যবান তত্ত্ব বিকশিত করে। ন্যায় দর্শন জ্ঞানের প্রকৃতি, জ্ঞান অর্জনের পদ্ধতি, তর্ক-বিতর্কের বিধান, তাত্ত্বিক ও প্রয়োগিক বিষয়, শুদ্ধ ও অশুদ্ধ জ্ঞান, প্রমাণের ধরণ, সত্য ও মিথ্যা, কার্য-কারণ সম্পর্ক, নীতিশাস্ত্র, অনুমান, এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে।
গৌতম সূত্র:
ন্যায় দর্শনের প্রাচীনতম গ্রন্থ গৌতম সূত্র। এই গ্রন্থের লেখক গৌতম ঋষি। তার নামের বিশেষ কোনও ইতিহাস বিদ্যমান না থাকলেও বলা হয় তিনি একজন বিখ্যাত ন্যায়বাদী ছিলেন এবং ন্যায় দর্শনের অভিজ্ঞতার আধারে এই সূত্রটি লিখেছিলেন। গৌতম সূত্রে ন্যায় দর্শনের মূল নীতি ও বিধান সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। গ্রন্থটি আনুমানিক ২,০০০ বছর পুরাতন এবং ন্যায় দর্শনের মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়। ন্যায় দর্শনের প্রধান প্রভাবক এই গ্রন্থের বিশ্লেষণ ও ভাব ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে।
বাৎস্যায়ন ভাষ্য:
বাৎস্যায়ন ভাষ্য গৌতম সূত্রের একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ ভাষ্য। বলা হয় বাৎস্যায়ন একজন বিখ্যাত ন্যায় শিক্ষক ছিলেন এবং গৌতম সূত্রের আলোকে ন্যায় দর্শনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে এই ভাষ্যটি লিখেছিলেন। বাৎস্যায়নের ভাষ্য গৌতম সূত্রের মৌলিক অর্থ ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে এবং ন্যায় দর্শনের গভীরতা ও বিস্তৃতি তুলে ধরে। এটি ন্যায় দর্শনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ এবং বিস্তারিত চর্চা প্রদান করে। তার ভাষ্য শুধুমাত্র গৌতম সূত্র ব্যাখ্যা করে না, বরং নতুন তত্ত্ব ও ধারণা ও প্রবর্তন করে।
চতুর্থ খন্ড – বাৎস্যায়ন:
গৌতম সূত্রের চতুর্থ খন্ড বাৎস্যায়নের ভাষ্যে
“অনুমান”
এবং
“উপমান”
এই দুটি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
অনুমান:
অনুমান হলো একটি প্রমাণের বিশেষ প্রকার যা ন্যায় দর্শনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনুমানের মাধ্যমে মানুষ নতুন জ্ঞান অর্জন করে। অনুমান তিনটি প্রধান অংশে বিভক্ত :
- পূর্বরূপ: যা যে বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে তার প্রাথমিক জ্ঞান প্রদান করে।
- উত্তরপক্ষ: যা পূর্বরূপের উপর ভিত্তি করে নতুন জ্ঞান প্রদান করে।
- হেতু: যা পূর্বরূপ এবং উত্তরপক্ষের মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক স্থাপন করে।
বাৎস্যায়ন তার ভাষ্যে অনুমানের বিভিন্ন প্রকার এবং তাদের অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি একটি সঠিক অনুমানের প্রয়োজনীয় গুণাবলী নির্দেশ করেছেন। এছাড়াও তিনি অনুমানের বিভিন্ন ধরণ এবং তাদের প্রয়োগ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
উপমান:
উপমান হলো একটি প্রমাণের প্রকার যা একটি জিনিসের সাথে অন্য জিনিসের সাদৃশ্য নির্ধারণ করে। উপমানের মাধ্যমে মানুষ একটি অজ্ঞাত জিনিস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে। উপমানের তিনটি প্রধান অংশে বিভক্ত :
- উপমেয়: যা যে বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে তার প্রতীক বা সাদৃশ্য।
- উপমান: যা উপমেয়ের সাথে সাদৃশ্য রাখে।
- সাদৃশ্য: যা উপমেয় এবং উপমানের মধ্যে সাদৃশ্য স্থাপন করে।
বাৎস্যায়ন তার ভাষ্যে উপমানের বিভিন্ন প্রকার এবং তাদের অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি একটি সঠিক উপমানের প্রয়োজনীয় গুণাবলী নির্দেশ করেছেন। এছাড়াও তিনি উপমানের বিভিন্ন ধরণ এবং তাদের প্রয়োগ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
উপসংহার:
গৌতম সূত্র এবং বাৎস্যায়নের ভাষ্য ন্যায় দর্শনের মৌলিক এবং গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। এই গ্রন্থগুলো ন্যায় দর্শনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ এবং বিস্তারিত চর্চা প্রদান করে। আজও এই গ্রন্থগুলো ন্যায় দর্শন শিক্ষার জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায় দর্শন শিক্ষার জন্য এই গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন করা অত্যন্ত উপকারী এবং সাহায্য করবে মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধি বিকাশে।
তথ্যসূত্র:
-
Goutam Sutra O Batsayan Bhashya:
https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.338183
“Goutam Sutra O Batsayan Bhashya” is a Bengali-language book by Tarkabagish, Phanibhushan, Ed., published in 2018. It is a 13.5 MB PDF file exploring the Nyaya Darsan (philosophy) of the Gautama Sutra, a foundational text in the Nyaya school of Indian philosophy. The book is available for download and online reading. Furthermore, it has been archived by the Internet Archive.
Goutam Sutra O Batsayan Bhashya by Tarkabagish, Phanibhushan, Ed. |
|
Title: | Goutam Sutra O Batsayan Bhashya |
Author: | Tarkabagish, Phanibhushan, Ed. |
Subjects: | C-DAK |
Language: | ben |
Collection: | digitallibraryindia, JaiGyan |
BooK PPI: | 600 |
Added Date: | 2017-01-20 04:08:13 |